বিশেষ প্রতিবেদন
Hits: 683
একজন বাংলাদেশির সমস্ত আমেরিকাতে আছে ৭০ টিরও বেশি হাসপাতাল। কথাটা শুনে কিছুটা অ’বা’/ক হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে শোনা যাক সেই অবি’/শ্বাস্য রকমের একটি বস্তবিক গল্প। গল্পটি কোনো গল্প নয় এটা একজন কর্মহীন মানুষের আমেরিকায় নিজের প্রতিষ্ঠিত হওয়ার বাস্তব কাহিনী। স্বনামধন্য এই বাঙালির জন্মস্থান সিলেট জেলার দত্তরাইল গ্রামে। তিনি হলেন সেখানকার তৎকালীন জমিদার কালীপদ দত্ত চৌধুরীর সন্তান। বাবা জমিদার হলে কী হবে তিনি আমেরিকায় গিয়ে অনেকটা হ’তা’/শ হয়ে পড়েছিলেন কারন তিনি সেখানে বেশ কিছুদিন বেকার ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে তিনি সেখানকার একটি হাসপাতালে যান সামান্যতম বেতনে কাজের আশায়, কিন্তু নিরা’শ হলেন যখন সেখান থেকে তাকে ফিরিয়ে দেয়া হলো। তিনি হ’তা’/শ তো হয়েছিলেন এরপর, এই ঘটনাটি তার মনে বড় ধরনের দা’গ কাটে। তবে আমেরিকার মতো দেশে অন্য কেউ হলে নতুন কোনো কাজের আশায় পুনারায় যেতেন অন্য কোনো হাসপাতালে।
তবে তিনি মনে মনে জে’/দ চাপিয়ে নেন চাকুরি করতে হলে এখানেই করবেন। বারবার চেষ্টা করতে থাকেন সেখানে চাকুরির জন্য। অবশেষে ১১ মাস ধরে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করার পর, তিনি কাজ করার সুযোগ পান। কাজের সুযোগ পাওয়ার পর অদ্ভুত একটি কাজ করে বসে বাঙালি এই ছেলেটি। তার এডমিনিস্ট্রেটরকে চ্যালেঞ্জ করে বসেন একদিন, যে তিনি এই হাসপাতালটি কিনে নিবেন।
তার এই কথা শুনে তার এডমিনিস্ট্রেটর পারলে হেসেই খু’/ন হয়ে যান। মাঝেমধ্যেই তার এই কথাটি নিয়ে বিভিন্ন উ’পহা’সও করতেন। অবশ্য করারই কথা। সদ্য আমেরিকায় এসে কোনোক্রমে একটা চাকুরি যো’গাড় করা বাঙালি এক ছেলের মুখে এসব শুনে। তিনি আর কী বা করতে পারেন। তবে ১৩ বছর পরেই পাল্টে গেলো সব।
সেই এডমিনিস্ট্রেটর অবা’/ক হয়ে দেখলেন ছেলেটি সত্যি সত্যি কিনে নিয়েছে সেই হাসপাতলটি। জন্ম হলো কেপিসি গ্রুপ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের। একটি দুটি করে ২০২০ সালে এসে কেপিসি গ্রুপের হাসপাতালের সংখ্যা এখন ৭০ টি। বর্তমানে আমেরিকার মতো জায়গায় সাত হাজার একর জমির মালিক কেপিসি গ্রুপ। আছে ৩০ লাখ বর্গফুটের বিশাল বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।
প্রায় ২০ হাজার মানুষ কর্মরত আছেন এসব প্রতিষ্ঠানে। এছাড়াও বিশ্বের প্রায় ৮ টি দেশে তাদের রয়েছে ২৫ ধরনের ব্যবসা। ভারতে আছে ১৬ টি চা বাগান। যার মধ্যে একটি প্রায় ৫০ হাজার একর আয়তনের। আমেরিকা জুড়ে কেপিসি গ্রুপের আজ বিশাল এক সাম্রাজ্য। আর এই বিশাল সাম্রাজ্যের একচ্ছত্র অ’ধিপতি হলেন ডা. কালী প্রদীপ চৌধুরী নামের এক বাঙালি।
যিনি মাত্র ৮ ডলার পকেটে নিয়ে আমেরিকায় এসেছিলেন। এসেই যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও চাকুরি থেকে প্র’/ত্যা’খ্যাত হয়েছিলেন। বর্তমানে কালী প্রদীপ চৌধুরীর ক্যালিফোর্নিয়ায় আছে সাড়ে ৩ কি.মি. আয়তনের বিশাল বাড়ি। তার সম্মানে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলসে রয়েছে কেপিসি রোড নামে ৫৫ কিলোমিটার সড়ক। এছাড়াও গুণী এই বাংলাদেশীকে নিয়ে এই লস এঞ্জেলসেই রয়েছে একটি শহর, যার নাম কেপিসি সিটি।
বিশ্বসেরা ব্যক্তিদের একজন হয়েও নিজের দেশকে ভোলেননি তিনি। বারবার এখানে ছুটে এসেছেন বিভিন্ন স্বপ্ন নিয়ে। নিজ গ্রামে পৈতৃক সম্পত্তির উপর নির্মাণ করতে চান বিশ্বমানের একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। তবে বিভিন্নভাবে তার এই উদ্যোগটি বাঁ’/ধার সম্মুখীন হয়। মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরেও ডা. কালী প্রদীপ চৌধুরী ঢাকার পূর্বাঞ্চলে তৈরি করতে চান। ১৪২ তলার একটি আইকনিক টাওয়ার, যা হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম উঁচু ভবন।
১৪২ তলা ভবন তৈরির বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তিনি নিজে আমেরিকা থেকে ইতিমধ্যে ৩৯ বার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। কিন্তু এই ধরনের প্রকল্প এখনও পর্যন্ত আলোর মুখ দেখতে পারেনি। ডাক্তার হিসেবে তিনি তার কর্মজীবন শুরু করতে গিয়ে পরবর্তীতে হয়ে যান ব্যবসায়ী তবে তা সম্ভব হয়েছে নিজ পরিশ্রম ও যোগ্যতায়। ডা. কালী প্রদীপ চৌধুরী বিশ্বের যে সকল বিশ্বসেরা সফল ব্যবসায়ী রয়েছে তার মধ্যে একজন।
তবে এই ধরনের মানুষেরা যদি দেশে বিনিয়োগ করতে পারে বা সরকার সুযোগ দেয় তবে গতি পাবে আমাদের অর্থনীতির চাকা। কর্মক্ষেত্রে সৃষ্টি হবে লাখ লাখ বেকার যুবকদের। কিছুটা হলেও লা’ঘ’/ব হবে বেকারত্ব। তাই দেশে বিদ্যমান সকল ধরনের রাজনৈতিক ও আম’লাতান্ত্রিক জ’টি’/লতাকে দূর করে সুযোগ সৃষ্টি করা উচিৎ। যত দ্রুত সম্ভব তার প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে সেটাই হবে আমাদের দেশের মানুষের জন্য ভালো কিছু।