মুক্তমত
Hits: 1151
দিহান নামের যে ছেলেটি একটি চ’টুল-চা’/ঞ্চল্যে ভরপুর মেয়েকে গ’/র্হি’/ত কাজ করে মে’/রে ফেলেছে; আমি সেই ছেলের ফে’সবুক প্রোফাইলে ঢু’কলাম সেখানে আজ কয়েক ঘন্টা ভালো করে দেখলাম।
সাক্ষাত্কার এবং পর্যবেক্ষণ এটা আমার কাজের মধ্যেই পড়ে। এই দুটি পদ্ধতি ব্যবহার করার মাধ্যমে আমি সবসময় আমার সমস্ত গবেষণামূলক তথ্য সংগ্রহ করে থাকি এবং সেটা করে চলেছি আমার কাজের অংশ হিসেবে। তবে এই ছেলেটির প্রোফাইল ঘাটতে সময় নিয়েছিলাম মাত্র দুই ঘন্টা, আর ঐ সময়টা ব্যয় করার পরে তো বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ করাটা আর সম্ভব হয় না। তারপরেও আমি বুঝতে চেষ্টা করেছি যে এই ছেলেটি কেমন, কী ধরনের পরিবেশ থেকে তিনি এসেছেন ইত্যাদি।
আমি বেশ অবাক হয়ে দেখতে পেলাম যে জিনিসটা সেটা হলো- ২০১৪ সালে তিনি দিব্যি দামি গাড়িতে করে নিজেকে জাহির করে বেড়িয়েছে। সেই ছবিগুলো তিনি তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম্যের হ্যান্ডেল ফে’সবুকেও আপলোড করেছেন। যদি এই ছেলেটির বর্তমান বয়স হয়ে থাকে ২২ বছর; তাহলে এটা পরিষ্কার বিষয় যে এই ছেলেটির বয়স ২০১৫ সালে ১৫ বছর।
তার এই মাত্র ১৫ বছর বয়সটিতে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়াটা কি সম্ভব?
তার বাবা-মা কী এই বিষয়টি সম্পর্কে জানতেন না যে, এই বয়সেও সে দিব্যি গাড়ি চালাচ্ছে?
তার অবশ্যই ভালো করেই জানতেন।
মাঝে মাঝে গাড়ি’র ছবি আপলোড দিয়েছে। নানান রঙের গাড়ির ছবি আপলোড দিয়েছে।
কখনো মটর বাইকের ছবি আপলোড দিয়েছে; সেই সঙ্গে নিজের ছবি।
এই সব ছবি সে আপলোড দিয়ে নানান সব নীতিকথাও ক্যাপশনে লিখেছে।
এই ছেলে বিয়ের আগে যৌ’/ন’/তা’কে শুধু অপছন্দ’ই করতো না; রীতিমত ঘৃ’/ণা করতো!
এই বিষয় সে ফে’সবুকেও লিখে জানিয়েছে।
গ’/র্হি’/ত কাজকে সে রীতিমত ঘৃ’/ণা করতো। এই ধরনের কাজ করা ব্যক্তিদের বি’/চা’রও সে দা’/বী করেছে।
এছাড়া জাগতিক সকল কিছুতে সে নিজেকে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ’র কাছে সমর্পণ করেছে সব সময়।
তাঁর ফেসবুক পোস্ট দেখে মনে হলো- সে ফেসবুকে নিয়মিত ইবাদত করতো।
খুবই ধা’র্মিক; যে কিনা বিবাহ ব’হির্ভূত যৌ’/’ন সম্পর্ক’কে ঘৃ’/ণা করে ইত্যাদি।
এই সব দেখছিলাম আর ভাবছিলাম- আমার কাছে বিষয় গুলো খুব পরিচিত মনে হচ্ছে।
কারন আমি নিজের জীবনে এমন দুই-একজন মানুষ’কে দেখেছি। এই শহরেই দেখেছি।
এদের কথা শুনলে মনে হবে- বিরাট ধার্মিক। বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তো দূরের কথা; ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া কিংবা ব্যাংকে টাকা জমা রাখা’কেও এরা হা’রাম মনে করে।
এরা রাস্তা দিয়ে বের হলে ভাই’রা মিলে নানান সব গাড়ি পর্যালোচনা করে। কোন গাড়ি কোন ব্র্যান্ডের ইত্যাদি।
নানান সময় নানান সব ধ’/র্মীয় বই কিংবা নীতিবাক্য সেয়ার করে।
দেখে মনে হবে- আহা, কতো’ই না ভালো মানুষ। কতো নীতিবান!
বলছি না- এইসব খা’/রা’/প কিছু। এইসব অতি অবশ্য’ই ভালো।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- এরা কি আদৌ বাস্তবে এমন?
বাস্তবে এরা ম’/’দ খায়। সিগারেট-গাঁ’/’জা সব’ই টানে!
শুধু কি তাই?
এদের সাথে আমার যে অভিজ্ঞতা হয়েছে; সেটা বর্ণনা করলে মনে হয় ক’/ঠিন হৃদয়ের মানুষেরও বুক কেঁ’/পে উঠবে।
আচার-আচরণ এবং স্বভাবে এতোটাই অমানুষ এরা। হিং’/স্র প’/শুকেও হার মানাবে।
অথচ বাইরে থেকে নিজদের কতো’ই না ধার্মিক, ভালো আচরণের মানুষ হিসেবে প্রচার করে বেড়ায়। ঠিক যেমনটা দিহান নামের এই ছেলেটার ফেসবুকে গেলে দেখা যাচ্ছে।
যেই ছেলে সব কিছুতে নিজেকে আল্লাহ’র কাছে সমর্পণ করতো; সে বিনা লাইসেন্সে ১৪ বছর বয়েস থেকে গাড়ি চালিয়ে বেড়াচ্ছে!
যে ছেলে বিয়ের আগে যৌ’/’ন’/তা’কে ঘৃ’/ণা করতো; সে কিনা শুধু মি’/ল’ন’ই করেনি; মেয়েটাকে হ’/’ত্যা’ই করে ফে’/লেছে!
একেই বলে দ্বি-চারিতা কিংবা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড।
এতেও আসলে আমার খুব একটা আ’/প’ত্তি নেই। কারণ আমি জানি- যে কোন মানুষ যখন একটা কাজ করে তার একটা কর্য-কারন সম্পর্ক আছে। মানুষ তো আর বিনা কারনে এমন ডাবল-স্ট্যান্ডার্ড আচরণ করে বেড়ায় না।
পারিবারিক পরিবেশ এবং পারিবারিক মূল্যবোধ’ই মানুষ’কে এমন করে তৈরি করে। যেই ছেলের বাবা একজন রেজিস্ট্রার; সে কিনা একেক সময় একেক গাড়ি কিনতে পছন্দ করতো। বাবা এতো টাকা কই থেকে পেত? এই বাবাও নিশ্চয় নিজেকে খুব ভালো এবং ধার্মিক মানুষ হিসেবেই প্রকাশ করে বেড়ায়। যেটা তাঁর সন্তানের কাছে খুব সহজেই ট্রান্সফার হয়েছে।
১৪ বছর বয়েসে সে যখন গাড়ি চালিয়ে বেড়িয়েছে- তার মা কি সেটা জানত না?
অতি অবশ্য’ই জানত। এতে তাদের কিছুই যায় আসেনি। তারা হয়ত এটাকে স্মার্টনেস মনে করেছে।
এই ছেলের এক ভাই মাদসাক্ত এবং এই ছেলে নিজে মাঝে মাঝেই নিজের মেয়ে বন্ধুদের একাকী বাসায় নিয়ে আসতো।
সেটা কি তার মা জানত না?
বাড়ির দারোয়ান তো ঠিক’ই জানত। মা হিসেবে দারোয়ানকে কি সে কখনো জিজ্ঞেস করে দেখেছে?
অবশ্য দারোয়ান সত্য বললে এই মা হয়ত উ’/ল্টো দারোয়ান’কেই দা’/য়ী করেছে।
বিশ্বাস করুন; আমার নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি। যেই ছেলে দুটো আমার সাথে অ’/মা’/নুষের মতো ব্যাবহার করেছে; আমি এদের ঘৃ’/ণা করার বদলে উ’/ল্টো বরং বলেছি- তোমরা যে একটা ডাবল স্ট্যান্ডার্ড জীবন যাপন করছ; একটা মি’/থ্যা’/র উপর জীবন কা’/টিয়ে দিচ্ছ; স্রেফ সেটা বুঝার চেষ্টা করো।
আপনি ভু’/লটা ধ’/রি’/য়ে দিলে বরং সমস্যা। দেখা যাবে উ’ল্টো আপনার উপর তে’/ড়ে আসছে!
পৃথিবীতে পয়েন্ট জিরো জিরো জিরো ওয়ান পারসেন্ট মানুষের সৌভাগ্য হয় ছয়টার অধিক দেশে পড়াশুনা করার। পৃথিবী নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে পড়ার অভিজ্ঞতা নেয়ার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বচ্চ ডিগ্রী নিয়ে যে কোন কিছু জ’/টি’ল ভাবে চিন্তা করার।সেই সঙ্গে অতি জ’/টি’ল বিষয় গুলোকে খুব সহজ ভাবে ব্যাখ্যা করার। আমি সৌভাগ্যবান, আমার সেই সুযোগ হয়েছে।
যেই ছেলেটা একটা জ’লজ্যা’/ন্ত মেয়েকে মে’/রে ফেল’লো ; সেই ছেলেটার মা আজকেও কোন রকম দ্বি’/ধা ছাড়া বলেছে- আমার ছেলে নি’/র্দো’/ষ। আপনার খোঁজ নিয়ে দেখেন।
এইবার আপনারাই বুঝে নিন- দো’/ষটা কেবল এই ছেলের না। যেই পারিবারিক পরিবেশে সে বড় হয়েছে সেটার ভূমিকাই এতে বেশি।
সেই পরিবেশ তাকে শিখিয়েছে
-কার-মোটর বাইক মানেই একটি চমকপ্রদ জীবন!
এজন্য তিনি ফে’সবুকে বিভিন্ন ধরনের গাড়ি আপলোড করতে পছন্দ করতেন।
যে পরিবেশটি তাকে শিখিয়েছে
-সুন্দর সুন্দর ইংলিশ পলিসিমূলক বাক্যগুলি সমাজে আউড়ালে সামাজিক মূল্য পাওয়া যায়।
এই কারনে তিনি ইংরেজী বাক্যগুলো ছবি দিয়ে আবরণ করতেন।
যে পরিবেশ তাকে শিখিয়েছিল
- ধর্মীয়-এবং ভালো ভালো নীতি বাক্য আওড়ালে সমাজে ব্যক্তিদের কাছ থেকে ভালো মানুষের পরিচয় পাওয়া যায়।
এ কারণে বিভিন্ন সময়ে ধর্মীয় নীতিগুলি বাক্য হিসাবে ব্যবহার করতো।
যার কোনটিই তার জীবনে কোনো দিন মেনে চলে বলে মনে হয়নি। তবে এই ছেলেটির নিজের বিশ্বাস ছিল একটু অন্য রকম- অর্থাৎ সে একজন পরহেজগার বা ভালো মানুষ।
এই লোকটি কয়েক মাস আগে পোস্ট করেছে যে, বিয়ের পূর্বে তিনি যৌ’/’ন/’তা ঘৃ’/ণা করেন; কে জানে যে সেই নীতিবাক্য পোস্ট করা ছেলেটি গ’/র্হি’/ত কাজের মাধ্যমে জ’/ল’জ্যা’/ন্ত একটি মেয়েকে মে’/রে ফেলেছে।
এটাকেই বলে থাকে ১০০% দ্বিচারিতা।
এভাবেই দানব বা অ’মা’/নুষ সৃষ্টি হয়। রাতারাতি বা কিছু সময়ের মধ্যে নয়।
আমিনুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, অস্ট্রিয়া এর ফেসবুক হতে সংগৃহীত।